অনলাইন ডেস্ক:
দেশের কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলেও তীব্র হয়েছে শীতের অনুভূতি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে এলে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। এখন যেমন ঢাকায় এই তাপমাত্রার পার্থক্য মাত্র ৫ ডিগ্রি। এ কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এদিকে আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, জানুয়ারিজুড়ে থাকবে শীতের প্রভাব।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশজুড়ে বাতাসের চাপ বেশি থাকায় হিমালয়ের পাদদেশ থেকে ঠান্ডা বাতাস উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় শীতের অনুভূতি তীব্র হচ্ছে। যেহেতু পশ্চিমাঞ্চল অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গজুড়ে উচ্চ চাপবলয় সক্রিয় আছে; ফলে বায়ুচাপ বাংলাদেশের দিকে প্রবেশ করছে। বাতাসের গতিবেগ তুলনামূলকভাবে একটু বেশি থাকার কারণে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট এবং ঢাকার পশ্চিমাঞ্চল ও খুলনার ওপরের দিকে যশোর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা- এসব অঞ্চলে শীতের অনুভূতি তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
গতকাল শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৮ সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গতকাল দেশের ১৩ জেলায় তাপমাত্রা নেমে গেছে ১১ ডিগ্রির নিচে। রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অফিস জানায়, পুরো জানুয়ারি মাস শীতের অনুভূতি থাকবে। তবে ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারির দিকে দেশজুড়ে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া ও ঝড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টিপাত থেমে গেলে তাপমাত্রা কমে গিয়ে ২০ তারিখের পরে মৃদু বা মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ আবার শুরু হতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, ১১ ডিগ্রির নিচে থাকা অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাজশাহীর বদলগাছিতে ৮ দশমিক ৯, সৈয়দপুরে ৯, তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৩, চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৫, রাজশাহীতে ৯ দশমিক ৬, ঈশ্বরদীতে ৯ দশমিক ৭, কুমারখালীতে ১০, রংপুরের ডিমলায় ১০ দশমিক ১, রংপুরে ১০ দশমিক ৩, বরিশালে ১০ দশমিক ৭, যশোর ও রাজারহাটে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ ছাড়া মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও রবিবার দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
সাধারণত তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আর ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। আর তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে সেই পরিস্থিতিকে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।