বাঘায় পদ্মার চরাঞ্চলে নলকূপে উঠছেনা পানি; তীব্র সংকটের আশঙ্কা
বাঘা(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলের গ্রামে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রীষ্মের তাপদাহ বাড়ার সাথে সাথে এই সংকট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের পর থেকেই পদ্মার চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৩নম্বর কালিদাশখালি ও এর আশে পাশের গ্রামের নলকূপ থেকে পানি উঠছে না। এডিপির খাত থেকে প্রকল্পের মাধ্যমে যে টিউবওয়েল বসানো হয়েছে তা অকেজো হয়ে পড়ায় দুষ্কর হয়ে পড়েছে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ। গত বছরের এপ্রিল মাসে সুপেয় পানির সংকটে পড়েছিল মানুষ। এবার তীব্র গরম পড়ার আগেই নিরাপদ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। অভিজ্ঞ মহলের ধারনামতে,প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অপরিকল্পিতভাবে ভূ-গর্ভের পানি উত্তোলনসহ সমস্যা দূর করতে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে যেসব উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়েছে সেগুলো তদারকি না করার ফলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়।
আজ বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে প্রকল্পের মাধ্যমে, ইউনিয়নটির ৩নম্বর কালিদাশখালি গ্রামের পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা সিরাজ মোল্লার বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় বিশুদ্ধ পানির জন্য হ্যান্ড টিউবওয়েল সরবরাহ করা হয়েছে। ৩/৪ মাস আগে সরবরাহ করা সেই টিউবওয়েলে এখন পানি উঠছেনা।
সেখানকার বাসিন্দা হাবলু সেখ, মনিরুল ইসলামসহ অনেকেই জানিয়েছেন, সেখানে ৭২ ঘর মানুষের বসতি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরবরাহ হ্যান্ড টিউবওয়েল ছাড়াও ২০/২২ জনের বাড়িতে হ্যান্ড টিউবওয়েল রয়েছে। সেইসব টিউবওলেও পানি উঠছেনা। প্রয়োজন মেটাতে এখন তাদের ভরসা নদীর পানি। সুপেয় পানির জন্য যেতে হবে দুরের একটি গ্রামে। এখন তাদের দুঃচিন্তা রমজান মাসে রাতে পানি সংগ্রহ করা নিয়ে।
প্রায় একই রকম অবস্থা দেখা গেছে, প্রকল্পের মাধ্যমে সরবরাহকরা ৫ নম্বর কালিদাশখালি গ্রামের নান্নু ব্যাপারির বাড়ি সংলগ্ন এলাকার টিউবওয়েলটির। নান্নু ব্যাপারি জানান,এখন অল্প অল্প পানি উঠছে। তবে আর কিছুৃদিন পর হয়তো পানি উঠবেনা।
জানা যায়,২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে এডিপির খাত থেকে প্রকল্পের মাধ্যমে চকরাজাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন পরিবারে বিশুদ্ধ পানির জন্য হ্যান্ড টিউবওয়েল সরবরাহ করা হয়েছে। যার প্রাক্কলিত মুল্যে ও চুক্তি মূল্য লেখা রয়েছে ২ লক্ষ টাকা। প্রকল্পের মাধ্যমে বরাদ্দ পাওয়া ২লাখ টাকার বিনিময়ে ইউনিয়নটির বিভিন্ন গ্রামে ১০টি হ্যান্ড টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। হিসেব করলে দেখা যায় একেকটি হ্যান্ড টিউবওয়েলের পেছনে ব্যয় হয়েছে ২০ হাজার টাকা।
প্রকল্প সভাপতি ও ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান ডিএম বাবুল মনোয়ারের দাবি, উপজেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ পাওয়া ২লাখ টাকা মূল্যের টিউবওয়েলগুলো উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে বসানো হয়েছে। গ্রামটি নদীর পাড় এলাকায় হওয়ায় পানি উঠছেনা। তবে সাব মাসেবুল (গভীর নলকূপ) বসিয়ে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নিবেন।
উপজেলা প্রকৌশী বেলাল হোসেন জানান,বরাদ্দকৃত টাকার টিউবওয়েল তার দপ্তর থেকে বসানো হয়নি। প্রকল্প কমিটির মাধমে বসানো হয়েছে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের উপ সহকারি প্রকৌশলী মিঠন কুমার রবি দাস বলেন, কয়েকদিন হলো যোগদান করেছি। এ বিষয়ে জেনে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। তবে কতফিট গভীরে পাইপ বসানো হয়েছে,সে বিষয়ে ধারনা দিতে পারেননি তারা।