রাজশাহী প্রতিনিধি:রাজশাহী মহানগরীতে মাদক কারবারীর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ায় পেট্রোল ঢেলে চায়ের দোকানে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদক সম্রাজ্ঞী শ্যামলীর বিরুদ্ধে।
দোকান মালিকের নাম মোসাঃ নিশা বেগম (৩৭)। চন্দ্রিমা থানাধীন শিরোইল কলোনী (রেলওয়ে বস্তি) এলাকার আজাহার আলীর স্ত্রী। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে শিরোইল কলোনি রেলওয়ে খোলার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় এঘটনা ঘটে। এঘটনায় ভুক্তভোগী নিশা বেগম বাদি হয়ে চন্দ্রিমা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তিনি জানান, আমাদের বসত বাড়ি থেকে ২০০ গজ পূর্বে রেলওয়ে খেলার মাঠ আছে, সেই মাঠের পশ্চিম কোনে পাকা রাস্তার ধারে আমার একটি চায়ের দোকান রয়েছে। সামান্য চায়ের ব্যবসা করে আমার পরিবার পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। আমাদের উপার্জনের একমাত্র সম্বল এটি। স্বামী অসুস্থ থাকার কারণে কোন কাজ কর্ম করতে পারেনা।
আমার বাড়ির পাশে শ্যামলী বেগম নামের একজন কুখ্যাত মাদক সম্রাজ্ঞী বসবাস করে। গত ১৩ জানুয়ারি দুপুরে তার বিরুদ্ধে গণমাধ্যম কর্মীদের ক্যামেরার সামনে আমি বক্তব্য দেয়। পরের দিন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাসহ অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইউটিউবে সংবাদটি ভাইরাল হয়।
এরই জের ধরে সোমবার ১৪ জানুয়ারি বিকালে মাদক সম্রাজ্ঞী শ্যামলী আমার বসত বাড়ির মেইন গেটের সামনে এসে আমার পরিবারের সাবাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালজ করতে থাকে। আমি তাকে গালিগালাজ করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে বলে “তুই সেই দিন সাংবাদিকদেরকে আমার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিস। আমার পেটে লাথি মেরে তুই কিভাবে ব্যবসা করিস আমি তাই দেখে নিব বলে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যাপক মারমুখি আচারণ করে। পরবর্তীতে রোববার দিবাগত রাত অনুমান সাড়ে ৩টার দিকে শ্যামলীর নেতৃত্বে আমার চায়ের দোকানে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।
পরে রেলওয়ের কর্মচারী সোহেল ও আসাদুল ইসলাম সংবাদ দিলে আমি দ্রুত ঘটনাস্থল গিয়ে দেখতে পায় আমার দোকানের সমস্ত জিনিসপত্র আগুনে পুড়ে গেছে। আমি অত্যান্ত গরিব মানুষ। রেলের জমিতে ঘর বানিয়ে কোনরকম পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করি। আমার একমাত্র উপার্জনের পথ সেটাও বন্ধ হয়ে গেল আজ। এখন আমি কী করে খাবো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নিশা বেগম।
স্থানীয় প্রশাসন দু-একজন হেরোইন খোর আটক করলেও মাদক সম্রাজ্ঞী শ্যামলীর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আগুনের মত নৃশংস ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে মনে করেন স্থানীয় মানুষ।
এব্যাপারে চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, দোকানে আগুন লাগার ঘটনায় শ্যামলীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ইতিমধ্যে তাকে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।